গুনাহগারকে না গুনাহকে ঘৃণা করি।





আমার কোনো মুসলমান ভাই দোষ করছে, করতেই পারে মানুষ তো। নিজের পরিবারের সদস্য দোষ করছে, আমার কাজ হবে, তার দোষগুলোকে ঢেকে রাখা ,আল্লাহ্ তা'লার দরবারে তার জন্য নামাজ পড়ে দুয়া করা, কান্নাকাটি করা! আমার ভাইকে যেন আল্লাহ্ তা'লা হেদায়াত দান করেন।

ঘৃণা করাটা কোনো কঠিন কাজ না, আমরা কি পারি না আমার যে ভাইগুলাে যারা নাফরমানির পথে আছেন তাদেরকে মহব্বত করে, তাদের সাথে কিছু সময় দিয়ে তাদেরকে আল্লাহ্ তা'লার রাস্তায় তুলে দিতে?অবশ্যই পারি চেষ্টা করে দেখুন একটু - দেখবেন কত হীরা আমাদের মত ভন্ড দ্বীনদারদের ঘৃণার স্বীকার হয়ে আছে, তারাও চায় মসজিদে আসতে,একত্রে কাতারবদ্ধ হয়ে নামাজ পড়তে কিন্তু আমাদের নেকীর তাকাব্বরী ভরা হিংস্র তাকানোটার জন্য আর সাহস পায় না, ভাবে আমি তো দুনিয়াদার, আমি আমার মতই থাকি। আমরা চাইলে  কি পারতাম না তাদেরকে বুকে টেনে নিতে - আসো ভাই! কিছু আল্লাহ্ তা'লার রহমত সম্পর্কে বলতাম, আমার নবীজীর সম্পর্কে বলতাম। হয়তো আমার এরকম চেষ্টার দ্বারা আল্লাহ্ তা'লা তার দ্বীল পরিবর্তন করে দিতেন, তাকে দ্বীনের রাস্তায় এস্তেকামাত দান করতেন।

সে যে হোক না কেন? সে তো একজন মুসলমান, কত দামি একজন মসলমান। পুরা দুনিয়া থেকেও একজন মুসলমানের দাম বেশী আল্লাহ্ তা'লার দরবারে। হাদিসে আসছে - একটা গাছ দ্বারা মুসলমানগণ কষ্ট পেতেন, তোহ এক ব্যক্তি গাছটা কেটে ফেলছেন যাতে মুসলমানগণের কষ্ট না হয়,আর এটাই তার জান্নাতে যাওয়ার কারণ হয়েছে। 

তার মধ্যে কিছুই না থাকুক, তাকে ভালো/ বড় বিবেচনা করার জন্য তার মুসলমান হওয়াটাই যথেষ্ট। তার ইজ্জত রক্ষা করা আমার দায়িত্বে,হাদিসে আসছে - সবচেয়ে নিকৃষ্ট সুদ হচ্ছে অপর মুসলমান ভাইকে বেইজ্জত করা। 

তুমি অপর মুলসমান ভাইয়ের দোষ গোপন রাখো, কালকে কেয়ামতের ময়দানে আল্লাহ্ তা'লা তোমার দোষ গোপন রাখবেন।আমাদের বড়রা বলতেন-কারো মাঝে যদি হাজারটাও দোষ থাকে আর তার মধ্যে যদি একটাও ভালো গুণ থাকে তাহলে সেটা প্রকাশ করতে থাকো, এবং তার ভালো হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট, আর আমাদের কাজ হচ্ছে কারো মাঝে যদি হাজারটাও ভালোগুণ থাকে আর তার মধ্যে যদি একটা খারাপগুণ থাকে তাহলে তার বাকি সব ভালোগুণগুলোতে পর্দা দিয়ে ঐ খারাপগুণটিই প্রকাশ করতে থাকি।

হাদিসে আসছে- কেউ খারাপ হওয়ার জন্য এটাই যথেষ্ট যে, সে অপরকে খারাপ বলবে বা ভাববে। এব্যক্তি এটা করতেছে! ঐব্যক্তি ওটা করতেছে! সারাক্ষণ যদি মানুষেরই দোষ খুজে বেড়াই আমার কাউরে ভালো নজরে আসবে না, নিজের দোষ খুজি দেখবেন সবাইকে ভালো নজরে আসবে।

নবীজী সাল্লাল্লাহু 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলছেন - তুমি নিজের দোষ খুজার মাঝে নিজেকে এতই ব্যস্ত রাখো, যেন অন্যের দোষ দেখার বা খুজার সময়ও না পাও।

সোস্যাল মিডিয়াতে আমাদের যে ভাই  গুলো বিভিন্ন অশোভনীয় কাজ করতেছেন,তাদেরকে ঠাস! ঠাস! ফতোয়া না দিয়ে , তাদের ঘৃণা না করে। মহব্বত করে, তাদের সাথে সময় দিয়ে তাদেরকে বুঝাই, কারণ চোরকে চোর!  চোর! বললে কখনো সমস্যা সমাধান হবে না তাকে তার জীবনের উদ্দেশ্য সম্পর্কে বলতে হবে, তাকে মহব্বত করে পাশে বসিয়ে আল্লাহ্ তা'লাকে চেনাতে হবে, আপনি ঘন্টার পর ঘন্টা বয়ান করে যেটা করতে পারবেন না, একটু আদর আর ভালোবাসা দিয়ে দেখুন সেটা করতে পারবেন। আমার নবীজী সাল্লাল্লাহ্ 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম'এর পুরা জিন্দেগিটাই মহব্বতের পয়গাম ছিলো, মুনাফিকের সর্দার আব্দুল্লাহ্ ইবনে উবাই'এর জানাজা পড়ার জন্য দাড়িয়ে গেছেন, ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'লা আনহু নবীজীর সামনে এসে বললেন - ইয়া রাসূল্লালাহ! আপনি কার জানাজা পড়াচ্ছেন? আপনি জানেন না এই ব্যক্তি টা কে? নবীজী উত্তরে বললেন - হে ওমর!  সরে যাও, আমি খুব ভালো করেই জানি! ওমর রাদিয়াল্লাহু তা'লা আনহু আবার জিজ্ঞেস করলেন- তাহলে জানাজা কেন পড়াচ্ছেন? রহমাহতুল্লীল 'আল আমিন  বললেন - যদি আল্লাহ্ মাফ করে দেন।

আর আমার আল্লাহ্ বলছেন - আমার হাবীব! যদি আপনি সত্তরবারও এর জানাজা পড়ান তাহলেও আমি একে মাফ করবো না,এর ভিত্তিতে নবীজী সাল্লাল্লাহু'আলাইহি ওয়াসাল্লাম বললেন - আমার আল্লাহ্ যদি বলতেন সত্তরবার জানাজা পড়ালে আমি এ ব্যক্তিকে মাফ করে দিবো, তাহলে আমি এর জন্য সত্তরবার জানাজা পড়িয়ে দিতাম। একজন মুনাফিকের জন্য??? হায়!আজকে আমরা মুসলামনকে মুসলমান বলতে রাজি নই! 


সবাইকে অনুরোধ করবো যাতে আমরা আমাদের নবীজী সাল্লাল্লাহ্ 'আলাইহি ওয়াসাল্লাম এর জীবনী পড়ি, তাহলে আমরা ইসলামের সৌন্দর্য বুঝতে পারবো ইনশাআল্লাহ্।

Comments